ফটোকপির বিলের ক্ষেত্রে উৎসে ভ্যাট কর্তন হবে?

আমার কাছে একজন ভ্যাটদাতা প্রশ্ন করেছেন যে, ফটোকপির বিল পরিশোধ করার ক্ষেত্রে উৎসে ভ্যাট কর্তন (ভিডিএস) করার নিয়ম কী? আমাদের দেশের ভ্যাট ব্যবস্থায় কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো স্কয়ারলী নিয়ম-কানুনের মধ্যে ফেলা যায় না।

তাই, সার্বিক দর্শন, নীতি, পদ্ধতি, প্রথার ভিত্তিতে সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এমন বিষয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রফেশনালদের মধ্যে মতানৈক্যও থাকে। ফটোকপি এমন একটা বিষয়।

ভ্যাট আরোপ হয় মূলত পণ্য বা সেবার ওপর। ফটোকপি পণ্য নাকি সেবা সেটা বিবেচনা করতে হবে। ফটোকপিতে মূলত কাগজ ব্যবহার করা হয়। কাগজ হলো পণ্য। এরপর ফটোকপি করার কাজকে ছাপার কাজ বলা যায় না।

ছাপার কাজ বলা গেলে সেবা বলা যেতো। আবার এটাকে উৎপাদনও বলা যায় না। বিবিধ সেবা বলাও সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গত হয় না। সব মিলে এক্ষেত্রে ধোয়াশাঁ রয়েছে। তবে, আমাদের কাজ করতে হবে, কাজ ফেলে রাখা যাবে না।

আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, সরকারের যেন রাজস্ব ফাঁকি না হয়; আর যেন আপনার অডিট আপত্তি না হয়। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে আমরা ফটোকপির ক্ষেত্রে ৭.৫% ভ্যাট উৎসে কর্তন করার বিষয়ে মতামত দেই।

অর্থাৎ ফটোকপি হলো মূলত কাগজ বিক্রি। কাগজ বিক্রি হলো ট্রেডিং। ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে ভ্যাট চালান না থাকলে ৭.৫% ভ্যাট উৎসে কর্তন করতে হবে, এটা বিধান। যারা ফটোকপি করেন তারা কেউই ভ্যাট চালানপত্র ইস্যু করেন না, এটা একটা বাস্তবতা।

আপনি ফটোকপির বিল পরিশোধ করে হয়তোবা একটা কাঁচা চালান নিয়ে আসেন। বিল পরিশোধ করা হয়ে গেছে। এখন উৎসে কর্তন করাও যায় না। তাই, বিলের ওপর ৭.৫% হিসাব করে পরিশোধ করে দিতে হয়।

কোনো প্রতিষ্ঠানে এমন অনেক ছোটো ছোটো ক্রয় করা হয়ে থাকে যাকে পেটি পারচেজ বলে। এমন পেটি পারচেজ এর ক্ষেত্রে সাধারণত সারা মাসে যে মূল্যের ক্রয় করা হয়, মাসের শেষে হিসাব করে সে মূল্যের ওপর ৭.৫% ভ্যাট পরিশোধ করে দেয়া হয়। তাহলে অডিট আপত্তি হয় না। সরকার ভ্যাট পায়। সব মিলে এটাই উত্তম সমাধান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top