মাঝে মাঝে আমার কাছে প্রশ্ন আসে যে, সিকিউরিটি সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি সেবা গ্রহণকারীর সাথে এভাবে চুক্তি করেছে যে, সেখানে ১০ জন সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হবে। সেবা গ্রহণকারী সরাসরি সিকিউরিটি গার্ডদের বেতন প্রদান করবে।
আর সিকিউরিটি সার্ভিস প্রোভাইডারকে ধরুন ২০% সার্ভিস চার্জ প্রদান করবে। সিকিউরিটি সার্ভিস প্রোভাইডার ২০% সার্ভিস চার্জের জন্য ভ্যাট চালানপত্র ইস্যু করে, তার সাথে ভ্যাট যোগ করে বিল করবে। এভাবে ভ্যাট প্রয়োগ আইনসঙ্গত নয়। এটা সরকারের ন্যায্য পাওনা ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার অপকৌশল মাত্র।
ভ্যাট আইনের ধারা ২(৫৯) অনুসারে, সরবরাহের বিপরীতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত বা প্রদেয় অর্থ হলো পণ। একই উপ-ধারা অনুসারে, পণের মধ্যে সার্ভিস চার্জ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ধারা ৩৫(খ) অনুসারে, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ হতে একক সরবরাহের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সরবরাহকে কৃত্রিমভাবে বিভাজন করা যাবে না।
এসআরও নং-১৮৬-আইন/২০১৯/৪৩-মূসক, তারিখ: ১৩ জুন, ২০১৯ খ্রিঃ এ বিধৃত সিকিউরিটি সার্ভিসের সংজ্ঞা অনুসারে, নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রহরী, কর্মী, জনবল বা যন্ত্রপাতি সরবরাহ কাজে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সিকিউরিটি সার্ভিস প্রদানকারী বলা হবে।
উপরোক্ত বিধি-বিধান অনুসারে প্রহরী এবং সার্ভিস চার্জ আলাদা করা যাবে না। এগুলো হলো, একক সরবরাহের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সরবরাহ। এভাবে আলাদা চুক্তিও করা যাবে না। করলে সে চুক্তি বেআইনী হবে। চুক্তি করতে হবে আইনসঙ্গতভাবে।
অন্য কোনো আইনের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো চুক্তি করা যাবে না। যেমন একজন ঠিকাদার ইট, বালি, সিমেন্ট, শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি নিয়োজিত করে নির্মাণ সেবা প্রদান করেন। এগুলো তাঁর নির্মাণ সেবা প্রদানের উপকরণ। এগুলো আলাদা সরবরাহ হিসেবে গণ্য হয় না বা গণ্য করা যাবে না।
তেমনিভাবে, সিকিউরিটি সার্ভিস প্রোভাইডার প্রহরী, যন্ত্রপাতি, পোশাক, ছাতা, লাঠি যাকিছু সরবরাহ করে সেগুলো সব হলো মূল সেবার উপকরণ। এগুলো আলাদা সরবরাহ হিসেবে গণ্য হবে না। সব একত্রে বিল করতে হবে। সর্বমোট মূল্যের ওপর ভ্যাট প্রয়োগ করতে হবে। শুধু সার্ভিস চার্জের ওপর ভ্যাট প্রয়োগ করা আইনসঙ্গত নয়।
DR. MD. ABDUR ROUF is a VAT Specialist and Trainer. He has about 27 years experience in the VAT management of Bangladesh. He is a regular trainer of International VAT Training Institute and Bangladesh VAT Professionals Forum (VAT Forum).
এখানে উল্লেখিত কোনো কিছু যদি সরকারের ইস্যূকৃত আইন, বিধি, প্রজ্ঞাপন ও আদেশ এর সাথে সাংঘর্ষিক হয়, সেই ক্ষেত্রে উক্ত ইস্যূকৃত আইন, বিধি, প্রজ্ঞাপন ও আদেশ-ই প্রাধান্য পাবে।