যোগানদার বলতে কী বোঝায়?

যোগানদার হলো, একটা সেবা। আমরা জানি যে, মূলত পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হয়। পণ্যের উদাহরণ হলো: সিমেন্ট, সিগারেট, ফ্যান, টেলিভিশন, সাবান, শ্যাম্পু, গাড়ি, মধু, সুতা, জুস ইত্যাদি।

আর সেবার উদাহরণ হলো: পরামর্শ সেবা, কুরিয়ার সার্ভিস, বিউটি পার্লার, যোগানদার, সিকিউরিটি সার্ভিস, পরিবহন ঠিকাদার মোবাইল ব্যাংকিং, অনুষ্ঠান আয়োজক ইত্যাদি। তবে, যোগানদার সেবা হলো একটা বিশেষ ধরনের সেবা।

যোগানদার সেবা আপনার সামনে আসে পণ্য হয়ে। এই বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। মাঠ পর্যায়ে প্রথমত যোগানদার সেবা চিনতে সমস্যা হয়। তাই, আমরা যোগানদার সেবা নিয়ে বেশ কয়েকটা টিপস দেবো, ইন-শা-আল্লাহ।

আমরা কমন ভাষায় সাপ্লায়ার বলি। সাপ্লায়ার বলে আমরা যোগানদারকে বোঝায়। কিন্তু ভ্যাট আইনে সাপ্লায়ার অর্থাৎ সরবরাহকারী টার্মের বিশেষ অর্থ রয়েছে। সে আলোচনা অন্যদিন করা হবে, ইন-শা-আল্লাহ। আজ আমরা যোগানদার আলোচনা করছি। যোগানদার শব্দের ইংরেজি হলো, প্রোকিউরমেন্ট প্রোভাইডার। অর্থাৎ যিনি ক্রয় করে সরবরাহ করেন।

তিনি সরবরাহ করেন পণ্য কিন্তু তিনি যে কাজ করেন সেই কাজকে বলা হয় যোগানদার সেবা। তিনি কী কাজ করেন? তিনি ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করেন, প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিল করেন।

কাজ পাওয়ার পর, তিনি পণ্য কেনার জন্য বিভিন্ন উৎসের কাছে যান, যেমন: উৎপাদনকারীর কাছে যান বা অন্য কোনো ব্যবসায়ীর কাছে যান, পণ্য ক্রয় করে পরিবহন করে নিয়ে আসেন, তারপর ক্রেতার কাছে সরবরাহ করেন।

অথবা আমদানি করে নিয়ে এসে ক্রেতার কাছে সরবরাহ করেন। তার এই কাজগুলোকে বলা হয় যোগানদার সেবা। কিন্তু তিনি আসলে পণ্য সরবরাহ করেন। ট্রেডার বা ব্যবসায়ীও পণ্য সরবরাহ করেন।

তাই, ব্যবসায়ী ও যোগানদারের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারলে যোগানদার সেবা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।

আমাদের দেশের ভ্যাট ব্যবস্থায় যোগানদার হলো একটা সেবা। তবে, তিনি পণ্য সরবরাহ করেন। তিনি পণ্য কিনে বা আমদানি করে সরবরাহ করেন। পণ্য উৎপাদনকারীর নিকট থেকে ক্রয় করার সময় ভ্যাট পরিশোধ করতে হয় বা পণ্য অন্য কোনো ব্যবসায়ীর (ট্রেডার) নিকট থেকে ক্রয় করার সময় ভ্যাট পরিশোধ করতে হয় বা পণ্য আমদানি করার সময় ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়।

অর্থাৎ সরবরাহকৃত পণ্যের ওপর ভ্যাট পরিশোধ করা থাকে। তাই, ভ্যাট নেয়া হয় যোগানদারের সেবার ওপর। তাই, এখানে ভ্যাটের হার ৭.৫%। যোগানদারের সেবা হলো: তিনি টেন্ডার সংক্রান্ত দলিলাদি প্রস্তুত করে দাখিল করেন, অফিসে আসা-যাওয়া করেন। এই পণ্য কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে তা তিনি খোঁজ-খবর নেন।

তারপর, যদি কার্যাদেশ পান তাহলে তিনি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করেন বা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ক্রয় করেন বা আমদানি করেন। পণ্য পরিবহন করে নিয়ে আসেন। তারপর পণ্য সরবরাহ দেন। তার এই কাজগুলো হলো যোগানদার সেবা।

উৎপাদনকারী কে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন, অন্যান্য দলিলাদি দেখে বোঝা যায়। তাছাড়া, উৎপাদনকারীর ফ্যাক্টরীসহ অন্যান্য স্থাপনা আছে সেগুলো দেখে বোঝা যায়।

আমদানিকারক কে সেটা ‍বুঝতেও অসুবিধা হয় না, সহজেই বোঝা যায়। ব্যবসায়ী অর্থাৎ ট্রেডার পণ্য কিনে বিক্রি করেন; আবার যোগানদারও পণ্য কিনে বিক্রি করেন। এই ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হয়। ট্রেডার এর সাথে যোগানদারের পার্থক্য করা একটু কঠিন হয়, বিধায় যোগানদার কে তা বোঝা একটু অসুবিধা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top