জনমনে ভ্যাট সচেতনতা সৃষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম

ট্যাক্সেশন থিওরীর দুটো দিক রয়েছে। একটা হলো, মানুষ স্বভাবগতভাবে কর ফাঁকি দিতে চায়। তাই, কঠিন নিয়ম-কানুন করে কর আদায় করতে হবে, যেন ফাঁকি দিতে না পারে। আর একটা দিক হলো, মানুষ স্বভাবগতভাবে সরকারের পাওনা পরিশোধ করতে চায়। তবে, কর প্রদানে জটিলতার কারণে মাঝে মাঝে তারা ফাঁকি না দিয়ে পারে না। তাই, কর প্রদানের সিস্টেম সহজ করতে পারলে মানুষ কর প্রদান করতে উৎসাহী হবেন। আমি এই দ্বিতীয় মতে বিশ্বাস করি।

আপনি যদি ডাক্তরের কাছে যান, ডাক্তার যদি আপনার সাথে কথা না বলেন, আলোচনা না করেন, বুঝিয়ে না দেন, তাহলে সে ডাক্তারকে আপনার পছন্দ হবে না। ডাক্তার যদি মনে করেন যে, তুমি কি বোঝো? আমি জানি কি ঔষুধ দিতে হবে। আমি ঔষুধ দিয়েছি, তুমি খেতে থাকো। এমন পরিবেশ রোগীর মানসিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। আবার, ডাক্তার যদি একই ঔষুধ দেন কিন্তু রোগীর সাথে কথা বলেন, ভালো ব্যবহার করেন, রোগীকে বুঝিয়ে দেন, শান্তনা দেন, তাহলে রোগীর ওপর ভালো প্রভাব পড়ে।

এ বিষয়টায় আমি করের ক্ষেত্রে আনতে চাই। তা হলো, করদাতাকে বোঝাতে হবে, তার সাথে কথা বলতে হবে। তাকে জানাতে হবে যে, তিনি কেনো কর দিচ্ছেন, তার কর দিয়ে কী করা হচ্ছে এবং কর দেয়া কত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই বোঝানোর কাজটা আমাদের দেশে তেমন একটা হয়নি। তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে, আমাদের দেশে কর-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেনি। ভ্যাটের কথায় আসি।

এখনও দেশের অনেক মানুষ বলে থাকেন যে, আমি ভ্যাট দেবো কেনো, অমুকে ভ্যাট দেয় না, ভ্যাট দিলে আমার লাভ কি? ইত্যাদি। মানুষের কাছে যেতে হবে, তাদেরকে বোঝাতে হবে। সরকারের পাশাপাশি এ কাজে বেসরকারকে বেশি এগিয়ে আসতে হবে। আরো সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বলতে হয় যে, পেশাদারদের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। শুধু কাজ করা এবং ফী নেয়া নয়, পেশাদারের সময়ের একটা অংশ ব্যয় করতে হবে সমাজের জন্য, অন্যের জন্য, নিজ গোত্রের সেবা প্রত্যাশীদের জন্য।

“সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।” করদাতার সাথে ভালো ব্যবহার করলে, তাঁকে বুঝিয়ে বললে, তাঁকে গুরুত্ব দিলে, সকলকে সমানভাবে দেখলে কর ব্যবস্থার ওপর উত্তম প্রভাব পড়বে বলে আমি বিশ্বাস করি। দয়া করে আপনার মূল্যবান মতামত জানাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top